ওয়াশিংটন, ২২ জুন : আমেরিকার সেনাবাহিনী ইরানের তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে বলে জানা গেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই সমাজমাধ্যমে এই দাবি করেছেন। ইরানও এই হানার কথা স্বীকার করে নিয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি, ইরানের ফরদো, নাতানজ (ও ইসফাহানেঅবস্থিত তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্রে সফল হামলা চালিয়েছে আমেরিকার সেনাবাহিনী। ইরানে ঢুকে হামলা চালিয়ে সবকটি আমেরিকান বিমান নিরাপদে দেশে ফিরেছে। এর জন্য তিনি আমেরিকান সেনাকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন। ট্রাম্প বলেন, ‘বিশ্বের আর কোন সেনাবাহিনী এই সক্ষমতা দেখাতে পারবে না। এখন ইরানের অবিলম্বে শান্তি চুক্তি করতে রাজি হয়ে যাওয়া উচিত।’
গত শুক্রবারই ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, তিনি দু সপ্তাহের মধ্যে ইরান আক্রমণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। ট্রাম্পের এই অবস্থানের পরেই তাকে সতর্ক করে দেয় রাশিয়া উত্তর কোরিয়ার মতন পরমাণু শক্তিধর দেশ। তারা জানিয়ে দেয় আমেরিকা যদি ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়ায় তাহলে পরিণতি ভয়ংকর হবে। কিন্তু কোন সতর্কবাণীকেই কার্যত কানে তোলেননি ট্রাম্প। ইরানের তিন পরমাণু কেন্দ্রে হামলা চালানোর পর দাবি করেছেন, ‘এবার শান্তির সময়।’
গত ১৩ জুন থেকে ইরান ইজরায়েল সংঘর্ষ শুরু হয়। ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নাম দিয়ে ইজরায়েল সেনাবাহিনী হামলা শুরু করে ইরানে। ৯ দিন ধরে জারি থাকা হামলায় ইরানে অন্তত ৬৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে ২৬৩ জন অসামরিক নাগরিক। জখম হয়েছেন অন্তত ২০০০ জন। ইজরায়েলের দাবি, ইরান পাল্টা ৪৫০ মিসাইল এবং ১০০০ ড্রোন দিয়ে হামলা চালিয়েছে। যার জেরে ইজরায়েলে অন্তত ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দাবি, যতক্ষণ না ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত হামলা চলবে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ব্রিটেন, জার্মানি ও ফ্রান্সের সঙ্গে বৈঠকে বসে ইরান। ইউরোপের এই তিন দেশের তরফেই ইরানকে সতর্ক করে বলা হয় অবিলম্বে পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ করতে হবে। যদিও এই প্রস্তাবে রাজি হয়নি ইরান। বরং তারা পাল্টা জানিয়ে দেয়, শান্তির লক্ষ্যে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি চলবে। এ নিয়ে তারা সমঝোতায় রাজি নয়। এমনকি ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোর সঙ্গে ফোনে কথা হয় ইরানের প্রধানমন্ত্রী মাসুদ পেজেসকিয়ানের। তিনিও জানিয়ে দেন ইরান শান্তিপূর্ণ লক্ষ্যে তাদের পরমানবিক কর্মসূচি চালিয়ে যাবে। বস্তুত ইরানের এই অনড় অবস্থানের পরেই আরও জটিল হয় মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি।
খবর আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রের।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan